|মুসলিমাহ : আদর্শ নারীর রুপরেখা
|লেখক : মাস্তুরাত টিম
|প্রকাশনী : নিয়ন পাবলিকেশন
|বিষয় : আত্মশুদ্ধি ও অনুপ্রেরণা
|সম্পাদক : জাফর বিপি
|কভার : পেপার ব্যাক
|লেখক : মাস্তুরাত টিম
|প্রকাশনী : নিয়ন পাবলিকেশন
|বিষয় : আত্মশুদ্ধি ও অনুপ্রেরণা
|সম্পাদক : জাফর বিপি
|কভার : পেপার ব্যাক
|ভাষা : বাংলা
একজন আদর্শ নারীর ঠিক কেমন হওয়া উচিত? ব্যক্তি ও সমাজজীবনে নারীর ভুলগুলো কোথায়? আর কী তার শুদ্ধ রূপ? এবং কীভাবে একজন নারী “আদর্শ নারী”-তে পরিণত হতে পারে মুসলিমাহ বইটিতে গল্পে গল্পে সেসবের চিত্র আঁকা হয়েছে। যা এঁকেছেন তাঁদেরই স্বজাতি একঝাঁক সত্যান্বেষী নারী লেখিকা—মাস্তুরাত টিম।
মিহি সুরে আজানের সুর ভেসে আসছে। আজানের সুমধুর সুর মুসকানের কর্ণকুহরে মৃদু পরশ বুলিয়ে যাচ্ছে। ফজরের আজান। চারিদিক অন্ধারাচ্ছন্ন। সূর্য উঠতে এখনো অনেকসময় বাকি।
মুসকান উঠে বসে তার বিছিনায়। দু'হাত দিয়ে মুখে আলতো পরশ বুলিয়ে মাইমুনার মাথায় হাত রেখে বলে, “আপু আজান হয়েছে। সালাত আদায় করতে হবে৷'
মাইমুনা স্বপ্নের ডানায় ভরকরে উড়ছে। খানিক বাদে বাদে তার চোখের পাপড়ি কেঁপেকেঁপে উঠছে। সে গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন এখনো।
নিভুনিভু অস্পষ্ট আলোয় দাঁড়িয়ে আছে মুসকান। সালেহা বেগম মেয়ের কাঁধে হাত রেখে বললেন, 'সালাত আদায় করেছো??
“জি আম্মি।’
‘মাইমুনা এখনো ওঠেনি?'
‘অনেকবার ডেকেছি, আড়ামোড়া দিয়ে আবার ঘুমিয়ে গেছে।'
সালেহা বেগম রেগে গেলেন। মাইমুনার মাথা দুলিয়ে বললেন, 'নবাবজাদীর এখনো ওঠার সময় হয়নি? সালাতের টাইম বেশি বাকি নেই। উঠে পড়ো, নয়তো পানি ঢেলে দেব বিছানায়।'
মাইমুনা ধড়িফড়িয়ে উঠে বসেছে। চোখ ডলতে ডলতে বলল, “মুসকান, তুই আমাকে ডাকলি না কেনো??
“তোমাকে অনেক ডেকেছি। তুই বরং উঠিসনি। এখন আমার দোষ তাই না?”
সালেহা বেগম রূঢ় গলায় বললেন, 'এখন ঝগড়া করার সময় না। তাড়াতাড়ি ফ্রেস হয়ে সালাত আদায় করো।'
মুসকান ‘কুরআন শরীফ" বুকে জড়িয়ে চোখ বন্ধ করে আছে। আনমনে ‘তাসবিহ' পাঠ করছে। অদ্ভুত এক আমেজ খেলে যাচ্ছে তার মন-মনন জুড়ে।
মাইমুনা, মুসকান জমজ বোন। ২০ মিনিটের ছোট-বড় তারা। টম এন্ড জেরির মতো সারাক্ষণ ঝগড়া লেগে থাকে। দু'বোন পুরো বাড়ি মাতিয়ে রাখে।
মুসকান কর্মোঠ ও চতুর। ফজরের পরে সে কখনো ঘুমায় না। প্রতিদিন ঘণ্টাখানিক ‘কালামুল্লাহ' পাঠ করে। এটা তার নিত্যদিনের অভ্যাস।
মুসকান কফির মগ হাতে নিয়ে ফুল বাগানের দোল চেয়ারে গিয়ে বসে। সাথে একটি
বই। বইটির নাম; ‘তুরস্কে তুর্কীস্থানের সন্ধানে।'
আবু তাহের মিসবাহ সাহেবের লেখা সম্পর্কে নতুনকরে বলার কিছু নেই। আর তা যদি হয় প্রিয় ইস্তাম্বুলের গৌরবময় সোনালী দিনকে ঘিরে লেখা, তাহলে তো কথাই নেই। মুসকান ইস্তাম্বুলের প্রেমে পড়েছে বহু আগে। বইটি পড়ে আরো একবার প্রিয় শহরের প্রেমে পড়তে চায় সে।
কফির মগে চুমুক দিয়ে বইয়ের পৃষ্ঠা উল্টাতে থাকে। চুমুকের তপ্ত ধোঁয়া হাওয়ায় উড়িয়ে ভাবনার জগতে বিচরণ করছে। সে বই পড়তে পারছে না। কল্পনার ক্যানভাসে ইস্তাম্বুলের ছবি আঁকছে। ইস্তাম্বুর মাটি, সবুজ ঘাস, রাস্তার পাশে সারিবাঁধা ফুলের মনহর দৃশ্যগুলো কল্লোচোখে দেখছে সে। আনমনে আওড়ে যাচ্ছে, 'ইশ! এই মুহূর্তে যদি ইস্তাম্বুলের মাটির ঘ্রাণ নিতে পারতাম!
সালেহা বেগমের ডাকে মুসকান তন্ময় ফিরে পায়। তার চোখে এখনো মিষ্টি আবহ লেগে আছে। কল্পনার ঘোর এখনো কাটেনি। মায়ের দিকে তাকিয়ে বলল, 'আম্মি! দেখো, ইস্তাম্বুলের সবুজ ঘাস, সারিবাঁধা ফুলগাছগুলো কত মনহর!
*এখানে ইস্তাম্বুল কোথাথেকে এলো? আমার বাড়ির ফুলবাগানকে ইস্তাম্বুলের বাগান
বানিয়ে দিলে?'
মুসকান চেতন ফিরে বলল, 'আম্মি বইটা পড়বে? তুমিও ইস্তাম্বুলের প্রেমে পড়ে যাবে। তখন তোমার কিচেনকে ইস্তাবুলের রেস্ট হাউজের সেই বিখ্যাত ‘রেস্টুরেন্ট' মনে হবে।
“বিখ্যাত রেস্টুরেন্ট বাদ দিয়ে এখন তোমার বাবার কিচেনে চলো। রুটি বানিয়ে দিচ্ছি তুমি হেঁকে উঠাবে। তারপর ভাজি বানাবে। আমাকে একটু হেল্প করো।'
'চলো আম্মি।'
মাইমুনা বড়, মুসকান বিশ মিনিটের ছোট। মাইমুনা মুসকানের বিপরিত। সে সকালে ঘুমাতে না পারলে চেঁচিয়ে বাড়ি মাথায় উঠিয়ে ফেলবে। Collect Muslimah Original Copy
Tags:
Upcoming Release Books